Class 9 History Suggestion 2020 new

1. ট্রাফালগারের যুদ্ধের (১৮০৫ খ্রি:) বিবরণ দাও।
ট্রাফালগারের যুদ্ধ-
১. নেপোলিয়নের যুদ্ধ-প্রস্তুতি : ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে অ্যামিয়েন্সের সন্ধি (১৮০২ খ্রি.) ভেঙে যাওয়ার পর নেপোলিয়ন বিভিন্ন ঘটনায় ইংল্যান্ডের ওপর ক্ষুব্ধ হন। তিনি সরাসরি ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে ইংল্যান্ড আকুমণের উদ্দেশ্যে ইংলিশ চ্যানেল ও উত্তর সাগরের তীরে ২ লক্ষাধিক সেনা সমাবেশ করেন।
২. তৃতীয় শক্তিজোট : এই পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের নেতৃত্বে অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও সুইডেনকে নিয়ে ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স-বিরােধী তৃতীয় শক্তিজোট গড়ে ওঠে। এই শক্তিজোট ভাঙার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন দ্রুতগতিতে অস্ট্রিয়াকে আক্রমণ করে উলমের যুদ্ধে (১৮০৫ খ্রি.) পরাজিত করেন |
৩. ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ: নেপোলিয়নের ইংল্যান্ড আক্রমণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই ইংরেজ নৌ-সেনাপতি নেলসন ফরাসি নৌ-সেনাপতি ভিলেনউভ কে ট্রাফালগারের নৌ যুদ্ধে (২১ অক্টোবর, ১৮০৫ খ্রিঃ.) শােচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। যুদ্ধে ফরাসি নৌবহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়।
2. নেপোলিয়নের স্পেন অভিযানের কারণ কী ছিল?
উত্তর :- ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা পতুগল মানতে অস্বীকার করলে নেপোলিয়ন পর্তুগাল দখল করেন এবং তারপর তিনি স্পেন দখলের পরিকল্পনা করেন।
নেপোলিয়নের স্পেন অভিযানের কারণ -
বিভিন্ন কারণে নেপোলিয়ন ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে স্পেনে অভিযান পাঠান। যেমন -
১. ‘মুক্তিদাতা নেপোলিয়ন : স্পেন দখল করে সেখানে ফ্রান্সের অনুকরণে উদারনৈতিক শাসন ও বিপ্লবী সংস্কারগুলি চালু করলে স্পেনবাসী মুগ্ধ হবে এবং তাকে মুক্তিদাতা বলে অভিনন্দন জানাবে বলে নেপোলিয়নের আশা ছিল।
২. স্পেনের আক্রমণের সম্ভাবনা : নেপোলিয়ন গােপন সূত্র থেকে জানতে পারেন যে, স্পেনের শক্তিশালী মন্ত্রী গদয় এর উদ্যোগে স্পেন ও প্রাশিয়া যৌথভাবে ফ্রান্স আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। এই পরিকল্পনা বানচাল করতে নেপোলিয়ন তার আগে স্পেন আক্রমণ করেন।
৩. স্পেনের নৌবহর: ব্রিটিশ নৌবহরের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য নেপোলিয়ন নিজের নৌশক্তি বৃদ্ধির চিন্তায় ছিলেন। ট্রাফালগারের নৌ যুদ্ধ এর (১৮০৫ খ্রি.) সময় তিনি স্পেনের নৌবহরের শক্তি ও কার্যকারিতায় মুগ্ধ হন। এজন্য তিনি স্পেনের নৌবহর দখল করে ফরাসি নৌশক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ নেন।
৪. স্পেনবাসীর বিদ্রোহ: নেপোলিয়ন পর্তুগাল অভিযানের সময় স্পেনের অনুমতি না নিয়ে স্পেনের মধ্য দিয়ে পােতুগালে সেনাদল পাঠান। এতে স্পেনবাসীর আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে তারা নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
3. ইটালির ঐক্য আন্দোলনে জোসেফ কাউন্ট ক্যাভুরের অবদান উল্লেখ করাে?
উত্তর :- ঊনবিংশ শতকের প্রথম দিকে ইতালি বিভিন্ন ছােটোবড়াে রাজ্যে বিভক্ত ছিল এবং পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া ছাড়া ইটালির সব রাজ্যেই অস্ট্রিয়া-সহ বিভিন্ন বিদেশি শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত ছিল।
ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ক্যাভুরের ভূমিকা
বিদেশি শক্তিগুলিকে বিতাড়িত করে খণ্ডবিখণ্ড ইটালির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যারা অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইতালি রাজ্য পিডমন্টের প্রধানমন্ত্রী কাউন্ট ক্যামিলাে বেনসাে ডি ক্যাভুর (১৮১০-'৬১ খ্রি.)।
১. মতাদর্শ: বাস্তববাদী ক্যাভুরের মতাদর্শ ছিল [i] ইতালি থেকে অস্ট্রিয়াকে বিতাড়নের উদ্দেশ্যে বিদেশি সাহায্য গ্রহণ করা এবং [ii] পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার স্যাভয় রাজবংশের অধীনে ইতালি ঐক্যবদ্ধ করা।
২. বিদেশি সাহায্য: বিদেশি শক্তির সাহায্য লাভের উদ্দেশ্যে ক্যাভুর[i] ক্রিমিয়ার যুদ্ধে (১৮৫৫-৫৬ খ্রি.) পিডমন্টের বাহিনীকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাঠিয়ে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে সহায়তা করেন। [li] ক্যাভুর ফ্রান্সের সঙ্গে প্লোমবিয়ের্সের গােপন চুক্তির (১৮৫৮ খ্রি.) স্বাক্ষর করেন।
৩. অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ: পিডমন্ট ফ্রান্সের সহায়তায় অস্ট্রিয়াকে ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনাে-র যুদ্ধে পরাজিত করে এবং লম্বা দখল করে। ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধির (১৮৫৯ খ্রি.) দ্বারা পিডমন্টের সঙ্গে লম্বাডি ও মিলান যুক্ত হয়। তবে কয়েকটি ঘটনায় রাজার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাভুর পদত্যাগ করেন |
৪. ফ্রান্সের সঙ্গে বােঝাপড়া : দেশের জটিল পরিস্থিতিতে শীঘ্রই ক্যাভুর আবার প্রধানমন্ত্রীর পদগ্রহণ করে (১৮৬০ খ্রি.) ফ্রান্সের সঙ্গে এক বােঝাপড়া করেন। এর দ্বারা স্থির হয় যে[i] ফ্রান্স মধ্য ইটালির ওই রাজ্যগুলির সংযুক্তিতে আপত্তি করবে না। [ii] ফ্রান্স এর বিনিময়ে ইটালির স্যাভয় ও নিস লাভ করবে। শীঘ্রই গণভােটের (১৮৬০ খ্রি.) মাধ্যমে পিডমন্ট এর সঙ্গে মধ্য ইতালির রাজগুলি যুক্ত হয় ।
0 Comments